মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আমি শৈবলিনী

আমি শৈবলিনী

আমি দিকহীন শূন্য এক তপ্ত শৈবলিনী
ছুটে চলেছি বহুযুগ ধরে কৈশোর,যৌবন কাল ভুলে  
আমি আজ পথ ভ্রষ্ট এক অজানা পথের পথিক
নেই আমার সেই কলরব,নেই আর গতি ।

মোর প্রবাহিত বাহ যে আজ বড়ই ক্লান্ত সিক্ত
খোঁজে এক নতুন পরিজন যেন অধরা স্বপ্নের ডানা মেলে
পাই খুঁজে কখনো তাঁকে খুব কাছে, ক্ষণিকের আশা জাগে  
আবার ছুটে চলে যায় সে নিমিষে সব স্বপ্ন ভেঙে
অবুঝ যে তাঁর মন থাকি সব জেনে নির্লিপ্ত।

কেন হয় এই বার বার পরিহাস সব কিছু জেনে
অশান্ত তাঁর মন কবে হবে স্নিগ্ধ নিজগুণে
ক্লান্ত এই পথিক ফিরে পাবে অচ্ছিদ্র পরিজন ।
নতুন আশায় যে মোর বেঁচে থাকা
বিশ্বাস আছে যে তাঁর প্রতি সব ফিরে পাওয়ার ।

আজ মনে হয় দিক আছে ঠিক নিজ অবস্থানে
শুধু প্রবাহের ধরা দেবে সময়ের  গতির কাছে
আমি আবার খুঁজে পাব আমার জীয়নের মানে
স্বপ্ন সত্যি হবে সবার কাছে।  

সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়
কলিকাতা
৯৮৩১৮৪০১৯৬

কোলকাতা-সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়

কোলকাতা
- সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়

তুমি আমার প্রানের শহর,তুমি তিলোত্তমা,
তোমার স্পন্দনে মনে জাগে ভালোবাসার ছোঁয়া।
দিনের শুরুতে প্রাণোচ্ছল,তুমি রাতের পরী
বহু কষ্ট আর লাঞ্ছনার তুমি যুগ যুগের প্রতীক ।

কত ইতিহাস তোমার নিয়ে গল্পের মালা গাঁথে,
মানুষ আর ভালোবাসা নিয়ে তোমার গতিপথে।
আনন্দের শহর তুমি,তুমি প্রথম প্রেমের সাথী,
আমার মনে তুমি জ্বালাও রাতের আগরবাতি।

তিনশো বারো বৎসরে শেষে অনেক কথা সবার মনে
তোমার জন্ম যে সাবর্ণদের তিনটি গ্রাম নিয়ে
সুতানটি,গোবিন্দপুর কালিকাতা মিলে
তুমি আমার প্রানের শহর তুমি কোলকাতা ।

২৪ শে আগাস্ট ১৬৯০ নিমতা ঘাটের কাছে,
গোরা এক সাহেব এসেছিলেন তোমার জনক রুপে।
জব চারনক নামটি তার ইতিহাস যে তাই বলে,
আজ যখন তোমায় দেখি দুই নয়ন মেলে।

তুমি আছো নব রুপে সবার প্রানের মাঝে
তুমি মোদের প্রাণের শহর কোলকাতা কলকাতাতেই।


“অগ্নি কবি শুধু দ্রোহের কবি নন তিনি প্রেমের কবি” - সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়















“অগ্নি কবি শুধু দ্রোহের কবি নন তিনি প্রেমের কবি”

সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়


কাজী নজরুল ইসলাম জ্যৈষ্ঠ ১১, ১৩০৬ ভাদ্র থকে ১২, ১৩৮৩ বঙ্গাব্দে তার সময় কালে কেবল বিদ্রোহ কবি হিসাবে আখ্যায়িত করলেও তার রচিত গান ও কবিতায় প্রেম বিষয়ে তাঁর কালজয়ী প্রতিভার কথা না বলা হলে অনেকটাই  অপূর্ণ থেকে যায়।  তিনি সাম্যবাদী, অসাম্প্রদায়িক কবি, একইসঙ্গে বিদ্রোহী ও প্রেমিক কবি, গীতিকার, সঙ্গীত রচয়িতা ।

তিনি  তাঁর একটি বিদ্রোহ কবিতায় বলেছেন  ‘‘মম এক হাতে-বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর হাতে রণ-তূর্য.... এই লেখা থেকে বোঝা যায় তিনি যেমন একদিকে  রণ-তূর্য বাদক আর অন্যদিকে প্রেম, প্রেয়সী।কাজী নজরুল ইসলাম কেবলমাত্র বিদ্রোহী বা দ্রোহের কবিই নন।, তিনি তাঁর গানে প্রেম ও বিরহ এক অসামান্য রুপ দান করে গিয়েছেন । তাঁর অন্তরে ছিল বিদ্রোহী সত্তা ও প্রেমিক সত্তার সমন্বয়। তাঁর রচনায় তাঁর প্রেমের নিবেদনে দেখা গিয়েছিল নারীর প্রতি, স্রষ্টার প্রতি, প্রকৃতি প্রতি, স্বাধীনতা ও দেশের প্রতি । সর্বোপরি মানুষের প্রতি প্রেম তাঁর হৃদয়ের ভিতর হতে ছাপ পাওয়া যায়। উদাহরন স্বরূপ  ‘মোর প্রিয়া হবে, এসো রাণী, দেব খোঁপায় তারার ফুল’গানটি যে কতটা রোমান্টিক বা কতটা গভীর তা প্রকৃত প্রেমিক অনুধাবন করতে পারবেন ।

প্রেমের গানে কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন অসাধারণ।  তাঁর গানে ছিল আবেগ-বৈচিত্র্য, লোক আঙ্গিক, গজল ও উচ্চাঙ্গ  সঙ্গীতের এবং কীর্তন আঙ্গিকের প্রভাব।তাঁর রচনায় শব্দ নির্বাচনে, গজলে আরবি, ফার্সি ও উর্দু শব্দের ব্যবহার কীর্তন আঙ্গিকের গানে সংস্কৃত শব্দ পেয়েছিলো প্রাধান্য। রাগরূপের সঙ্গে নজরুলের পরিচয় গভীর। এটি বোঝা যায় তার সৃষ্ট নতুন সুরের নামকরন দেখে যেমন- নির্ঝরিণী, সন্ধ্যামালতী, বনকুন্তলা, দোলন চাঁপা, মীনাক্ষী, বেনুশ।

 কবির জীবনে প্রেম এসেছে বহুবার, তাই তার বহু প্রেমের গানে বিরহের সুর লক্ষ্য করা গিয়েছিলো। প্রথম স্ত্রী নার্গিসের সঙ্গে বিচ্ছেদের নার্গিসের চিঠির উত্তরে লেখেন যে গান, সেটা এই সময়ের যেন সকল হৃদয়ের বিরহ ব্যাথা-‘যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নাই, কেন মনে রাখ তারে, ভুলে যাও তারে ভুলে যাও, একেবারে।’

প্রেমিক নজরুলের আসল পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর রচিত গানগুলিতে৷ প্রেম-বিরহ, ব্যর্থতা, আশা, নিরাশা নিয়ে তার লেখায় নজরুলের কোনো জুড়ি ছিল না৷ তাঁর প্রেম বিষয়ক লেখা সংগীতের কথা ও সুর এককথায় মানুষের মনের অন্তরে মিশে যাওয়া চেতনায় পরিপূর্ণ ৷ নজরুল নানা প্রায় তিন হাজারেরও বেশি গান রচনা করেছেন। পৃথিবীর কোনো ভাষায় একক হাতে এত বেশি সংখ্যক গান রচনার উদাহরণ নেই, তাঁর নিজের লেখা গানগুলোর  বড় একটি অংশই তাঁরই সুরারোপিত। এই গানগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রেম, ভক্তি, প্রকৃতি নিয়ে বন্দনা এছাড়া দেশাত্মবোধক গান। তার গানে রয়েছে রাগপ্রধান বৈশিষ্ট পরিলক্ষিত হয়েছে  এছাড়া তিনি হাসির গান, ব্যঙ্গাত্মক গান, সমবেত সংগীত, রণ সংগীত ইত্যাদি রচনা করেছেন ।

সঙ্গীতে প্রেমের স্মৃতিচারণও করতেন নজরুল- ‘মনে পড়ে আজ সে কোন জনমে বিদায় সন্ধ্যা বেলা, আমি দাঁড়ায়ে রহিনু এপারে, তুমি ওপারে ভাসালে ভেলা। নজরুল ঐতিহাসিক প্রেমের গানেও তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। যেমন- লাইলী-মজনু, শিরি-ফরহাদ, শাহাজাহান-মমতাজ, সেলিম-নুরজাহানকে নিয়ে লেখা গান।
কাজী নজরুলের অসংখ্য প্রেমের গান দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি সাম্যবাদী হলেও প্রেমের কোমল রূপও তার মধ্যে বিদ্যমান ছিল তাই তিনি দ্রোহের কবির সাথে প্রেমের কবি।




তোমার মাঝে অমর আমি

তোমার মাঝে অমর আমি

যখন আমি থাকবো না আর,তুমি খুঁজো আমারে সন্ধ্যাতারার মাঝে।
আমার চুপ করে যাওয়া শব্দ শুধু থাকবে তোমার মনের পাশে।

নিষ্ঠুর নয়, এই পরিনতি তো তোমার অজানা ছিল না কভু,
তবু মোরা দুজনা কেন ছুটছিলাম মিথ্যা প্রলোভনের পিছু ।

জীবনের সেই ভোরবেলাতে ওই পদ্মপাতায় বৃষ্টির জল তো ছিল, দিনের শেষের বিন্দুতে তা পুষ্করিণীতে মেশে।

ভালোবাসার রঙিন স্বপ্ন তুমি ভুলে যেও না যেন বিরহের সেই দুঃস্বপ্নকে আপন করে নিও।

মিথ্যা ওই প্রলোভনে তাই হয়তো ছিল ভুল,কলহ তবে হয়েছে মোদের সে ছিল  অজানা  ভুল।

আগে পরে যাবার বেলা আসবেই একদিন যেন,ভালোবাসার প্রলেপ গুলো  আপন অন্তরে রেখ ।

ছিল না কভু ফাঁকি মোর সেই ভালোবাসায়,মন মর্মে লুকিয়ে  রেখ চিরদিনে আমায় ।

হোক না পথ লম্বা কিম্বা ছোট ভালো লাগা সেই দিনগুলো মোদের হোক বড় ।

সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়
কলকাতা
9831840196

শিক্ষক দিবস

শিক্ষক দিবস

দিনটি ছিল বাগদেবীর আরাধনার দিন ,এই বছরে আমরা সকলেই  স্কুল থেকে বিদায় নেব আমাদের  স্কুলে মস্ত বড় হল ঘর আছে । সেখানেই পূজার ছিল  হয়েছিলো আয়োজন।

এবারই আমাদের স্কুল জীবনের শেষ বছর, তাই সবার মনটা যে বড়ই ভারী, সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের  অনেকেই ,সবার মনে  কেমন যেন এক বিদায়ের অনুভূতি।
নাটক,গানের সুর,আর কবিতার আসরে মনটা হালকা হয়ে গেল  কিছুটা,তারপর চলে এলাম সবাই বাড়ি ।

এরপর  কেটে গেছে এক এক করে অনেক বছর, কৈশোর  পেরিয়ে,যৌবন তখন প্রায়  অন্তিম লগ্নে করেছে  পদার্পণ ।
আজ সব কিছু ভুলে বাস্তবের কঠিন সত্যর সম্মুখীন সবাই,
কাজ করে,হেঁটে চলেছি বড় রাস্তা দিয়ে,হঠা দেখি সামনে মাস্টার মশাই সামনে,ছুটে গিয়ে একটা প্রনাম করি।

কেমন  আছেন মাস্টার মশাই ?
আমায়  চিনতে পারেন ?
সত্তর অতিক্রান্ত সেই  শুভ্র কেশ,পরনে খদ্দরের  পাঞ্জাবি আর সাদা ধুতি পরিহিত মাস্টার মশাই গুরুগম্ভীর স্বরে বললেন তুই তো সঞ্জয় উবাচ, টেন সি ।
আমি সত্যি  স্তম্ভিত  আনন্দে  গলা বদ্ধ, কত দিনের পরে ঠিক
বৃদ্ধের  চোখে  তখন আনন্দ অশ্রুধারা, তারপর কত প্রশ্ন তাঁর।

হা, মাস্টার মশাই আমি সেই  যাকে পড়া  না করায়  ক্লাস  থেকে বের করে দিয়ে ছিলেন । খুব  রাগ  হয়েছিল মনে । নতুন  কৈশোর এর  সূচনায়  শরীরে বয়ে গিয়েছিল  এক অপমানের  ছোঁয়া, এসেছিল বিদ্রোহী ভাব ।

পরিচয় হয় অপমানের সঙ্গে কারন অন্য সবার হাসি, তাচ্ছিল্য,পরিহাস করেছিল আমায় হেয়।
খুব রেগে মন না চাওয়া বাজে কথা হয়েতো বলেছিলাম আপনার অগোচরে ।
তখন ছুটির  ঘন্টা  সবে পড়েছে, আমি  তখনো  কান দুখানি  ধরে নীলডাউন।
হঠাৎ আপনি এসে আমার মাথায় হাত দিয়ে বলেছিলেন কষ্ট  পেয়েছিস তো ?
দেখিস তোর এতে  ভালো হবে কারণ তুই আর ভুল পথে যাবি না ।

হ্যাঁ, মাস্টার মশাই  আমি  আজ ঠিক মানুষ হয়েছি যেমনটি  আপনি চেয়েছিলেন ,আপনার থেকে শিখেছি

"যদি  তোর  ডাক  শুনে  কেউ না আসে তবে একলা চলো রে "

আপনি আমাকে আপনার  সেই যৌবনের সেরা সময় দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন এক নির্ভীক ভবিষ্যতের যুবককে ।

যে শুধু  জানে "অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে"।

নতজানু  হয়ে যখন  আমি  প্রনাম  করতেই আমায় মাস্টার  মশাই আবার বুকে টেনে  নিলেন,সেদিনের সেই ভুল  ঠান্ডা হলো তার শীতল পরশে।

শ্রী সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়
কলিকাতা
৯৮৩১৮৪০১৯৬

ইন্দ্রপতন

ইন্দ্রপতন

মস্তক লুটায় যে আজ মেদিনী বক্ষধামে
মেঘের গর্জন থেমেছে বহুক্ষণ
নাহি আর প্রাণ বেঁচে ইন্দ্রজয়ীর দেহে
সুমিত্রা নন্দন যে করেছে তাঁর কর্ম সমাপন।

এই ছলের হবে কবে অবসান
নাগপাশের খেলা যে ছিল এক অতিতের ভুল
বজ্রের প্রয়োগ তো ছিল না সেই মনে
ক্রোধের অগ্নিশিখায় লিপ্ত যে সবার মন।

সুলোচনার ক্রন্দনের কি হবে আজ
ফেরেনি যে ইন্দ্রজয়ী আর এক কপট খেলার নাগপাশে
যজ্ঞগৃহে যে হয়েছিল প্রাণপাত সকলের অগোচরে
ধর্মপ্রেমে দীক্ষিত কনিষ্ঠ ভাতৃদয় আর অঞ্জলিপুত্র সবে
মেঘে ঢাকা তারার তখন শেষ অন্তিমক্ষণ।

প্রাণনাশ জেনে দশানন করে যে আজ ক্রোধের ক্রন্দন
ত্রিভুবন অধিকারী যে সে ইন্দ্রজিতের ভরে
অঙ্গীকার ছিল প্রতিশোধের তাঁর
সেই কর্মফলের বলি যে আজ সবাই ,তা জেনে
চলে ইন্দ্রজয়ীর খোঁজে,পণ করবে সবার প্রাণনাশ।

পথ আটকায়ে দাঁড়ায় সুনয়না ইন্দ্রজিৎ ঘরণী
কহে মস্তক ফিরাবো আজ বীণা যুদ্ধে আমি
হবে না আর কারোর রক্তের বলি
ফিরায়ে আনে শির আপন বক্ষ ভরে ।

সুমিত্রা নন্দন করে জয়গীত ইন্দ্রজিৎএর
নয়ন বাহে জল দশানন আপন ভুল বুঝে
দেরী হয়ে গেছে তাঁর আপন কালিমাতে
মেঘের আচ্ছাদন সরে গেছে তাঁর প্রাণের ।

একাকীত্বের খেলা


একাকীত্বের খেলা

মেতেছিলো তারা যে একাকীত্বের খেলায়
জীবনে সে যে এক নতুন দিন,
দিনটি ভাল কি খারাপ জানি নি কখনো
দেখতে হবে এমন দিন, ভাবি নি কখনো ।

অক্ষমতা ছিল ? না, নীল আকাশের মেঘের
আড়ালে লুকিয়ে থেকে সব জেনে ছিলেম অবুঝ ।
পারতাম সব আটকাতে ছিল সে ভাবনাও মনে
তবু পারি নি যে তোর কথা ভেবে।

ওরা অহংকারের গহনা পরে খুদ্র মনের পথিক
জানে না যে সবার ওপরে মানুষ সত্য তাহার ওপরে
নাই ।

শুধু নিজ নিজ করে করে , যে আপন কে করেছে যে পর
বোঝে নি যে এখন একাকীত্ব এক দিন তাদেরও করবে গ্রাস
সেদিন কি ভুল আর ঠিক হবে তাই ।

ঘর ভাঙ্গার খেলায় মেতেছে যে যারা
মূর্খ যে তারা, আপন আন্তঃ সুখ ভেবে যে দিশেহারা
বঞ্ছনা আর একাকীত্ব  করবে তাদের একদিন গ্রাস ।

পর কে আপন করা, যে এক মহৎ জীবনের পথ
কবে বুঝবে তারা সে কথা ? দেবে অন্তরের ভালোবাসা ।

নাহি যে তোর কিছুই অজানা,
তাই পারি নি  একাকীত্বের মায়াজালে
আলাদা করে  তোকে ডেকে ।

রক্ত কি কখনো আলাদা হয় ?
ভুল আসলে সব ভুল কবে বুঝবে  
সব অবুঝ যারা বলে আমরা নীল রক্তের মানুষ।


সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়
কলিকাতা
৯৮৩১৮৪০১৯৬

শিক্ষক দিবস


শিক্ষক দিবস

দিনটি ছিল বাগদেবীর আরাধনার দিন ,এই বছরে আমরা সকলেই  স্কুল থেকে বিদায় নেব আমাদের  স্কুলে মস্ত বড় হল ঘর আছে । সেখানেই পূজার ছিল  হয়েছিলো আয়োজন।

এবারই আমাদের স্কুল জীবনের শেষ বছর, তাই সবার মনটা যে বড়ই ভারী, সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের  অনেকেই ,সবার মনে  কেমন যেন এক বিদায়ের অনুভূতি।
নাটক,গানের সুর,আর কবিতার আসরে মনটা হালকা হয়ে গেল কিছুটা,তারপর চলে এলাম সবাই বাড়ি ।

এরপর কেটে গেছে এক এক করে অনেক বছর, কৈশোর  পেরিয়ে,যৌবন তখন প্রায়  অন্তিম লগ্নে করেছে  পদার্পণ ।
আজ সব কিছু ভুলে বাস্তবের কঠিন সত্যর সম্মুখীন সবাই,
কাজ করে,হেঁটে চলেছি বড় রাস্তা দিয়ে,হঠা দেখি সামনে মাস্টার মশাই সামনে,ছুটে গিয়ে একটা প্রনাম করি।

কেমন  আছেন মাস্টার মশাই ?
আমায়  চিনতে পারেন ?
সত্তর অতিক্রান্ত সেই  শুভ্র কেশ,পরনে খদ্দরের  পাঞ্জাবি আর সাদা ধুতি পরিহিত মাস্টার মশাই গুরুগম্ভীর স্বরে বললেন তুই তো সঞ্জয় উবাচ, টেন সি ।
আমি সত্যি  স্তম্ভিত  আনন্দে  গলা বদ্ধ, কত দিনের পরে ঠিক
বৃদ্ধের  চোখে  তখন আনন্দ অশ্রুধারা, তারপর কত প্রশ্ন তাঁর।

হা, মাস্টার মশাই আমি সেই  যাকে পড়া  না করায়  ক্লাস  থেকে বের করে দিয়ে ছিলেন । খুব  রাগ  হয়েছিল মনে । নতুন  কৈশোর এর  সূচনায়  শরীরে বয়ে গিয়েছিল  এক অপমানের  ছোঁয়া, এসেছিল বিদ্রোহী ভাব ।

পরিচয় হয় অপমানের সঙ্গে কারন অন্য সবার হাসি, তাচ্ছিল্য,পরিহাস করেছিল আমায় হেয়।
খুব রেগে মন না চাওয়া বাজে কথা হয়েতো বলেছিলাম আপনার অগোচরে ।
তখন ছুটির  ঘন্টা  সবে পড়েছে, আমি  তখনো  কান দুখানি  ধরে নীলডাউন।
হঠাৎ আপনি এসে আমার মাথায় হাত দিয়ে বলেছিলেন কষ্ট  পেয়েছিস তো ?
দেখিস তোর এতে  ভালো হবে কারণ তুই আর ভুল পথে যাবি না ।

হ্যাঁ, মাস্টার মশাই  আমি  আজ ঠিক মানুষ হয়েছি যেমনটি  আপনি চেয়েছিলেন ,আপনার থেকে শিখেছি

"যদি  তোর  ডাক  শুনে  কেউ না আসে তবে একলা চলো রে "

আপনি আমাকে আপনার  সেই যৌবনের সেরা সময় দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন এক নির্ভীক ভবিষ্যতের যুবককে ।

যে শুধু  জানে "অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে"।

নতজানু  হয়ে যখন  আমি  প্রনাম  করতেই আমায় মাস্টার  মশাই আবার বুকে টেনে  নিলেন,সেদিনের সেই ভুল  ঠান্ডা হলো তার শীতল পরশে।

শ্রী সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়
কলিকাতা
৯৮৩১৮৪০১৯৬

সাম্প্রতিক লেখা কবিতা

ঘর বেঁধেছে ঝড়ের পাখি / রঙ্গনা পাল /পর্ব-৪০

ঘর বেঁধেছে ঝড়ের পাখি/ রঙ্গনা পাল / পর্ব-৪০         অতীত হোক বা বর্তমান নারী চিরকাল পুরুষের ভালোবাসায় বশ। হ্যাঁ কেউ কেউ কখনও কখনও ছলনা করে ...