শনিবার, ২৩ মে, ২০২০

বিপ্লব / সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়












বিপ্লব
সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়

বিপ্লব এমনিতে সহজে আসে না,
টিফিনে কলেজের ক্যানটিনে টেবিল বাজিয়ে নয়।
পাড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে শেখানো কপচানোতে নয়,
ক্লাবের মাতব্বর হয়ে শিখিয়ে পড়িয়ে
গণসঙ্গীত গেয়ে দিলেও নয় !

বিপ্লব কোনদিন আসেও নি,
এইভাবে আসবেও না ।
পূজোর সময় মাওসেতুং বই বেচাকেনা,
ঘরে ঘরে কৌটো নিয়ে লিফলেট বিলি করা
সবসময় বিপ্লবীদের বিপ্লব মেরেছে !

পৃথিবীর ইতিহাসে সাক্ষী...
বিপ্লব আসে দৈন্যতায়,
সমষ্টিবাদ নিয়ে সাম্যের ভাবনায় !
একটা স্যাঁতসেঁতে ঘরের চালা ফুটো হয়ে,
সারা ঘর জলে ভেসে গেলে মনের আঙ্গিনায়।

বিপ্লব আসে সারাদিন পর দুবেলা খেতে না পেলে,
ঘরে বাইরে রোজ গনতন্ত্রের ধর্ষণ হলে !
বিপ্লব আসে খিদের তাড়নায় পেটের জ্বালা উঠলে।

স্বাধীনতা এতগুলো দিন শুধু দিচ্ছে,
ছোট মাঝারি সাইজের এক একটা বাঁধন
তাই বেশকিছু মনে জাগছে তুষের আগুন ।

বিপ্লব আসে সাগরের ঢেউ কে সাথে করে,
নোনা বালির সমুদ্রতটে পায়ে হেঁটে ফিরে ।
বিপ্লব আসে লালমাটির পোড়া গরমে বারুদের গন্ধে,

অন্ধকার হতে আলোর দিকে পথ চলাতে ।

চিরঘুমের রাত / সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়

















চিরঘুমের রাত
সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়


সময় দূরে গেছে সরে
প্রকৃতির হতে অনেকটা দূরে !
যেমনটি গেছে তোমার রাজ সিংহাসন,
শুধু জমানো সম্পদের করছো রক্ষণ 
তুমি হতে পারো নি কারোর,
না কৃষকের, না শ্রমিকের, না মানুষের।
হয়ে উঠেছো পৈশাচিক এক রক্তচোষা বাদুর
প্রত্যহ করছো শোষণ, গুনছি প্রহর।
তাই এখন এই লক্ষণগুলো হয়েছে প্রকট,
বড় বড় গর্তের মধ্যে লুকিয়ে মৃত্যু, সবার সন্নিকট  !
ভেবে দেখো ভারার ঘর সবটাই হবে শূন্য,
তোমার সবুজ  কাগজের নৌকাগুলো অসম্পূর্ণ।
রোজ তোমার স্বপ্নের কথা শুনছি বিকট,
আমরা অন্ধ ফকির হয়ে যাচ্ছি নিকট !
তবু আমরা এগিয়ে চলেছি ভুলে জাতপাত,
আসতে আসতে কাছে আসছে চিরঘুমের রাত !
তবু আমরা চেয়েছিলাম,
"অসতো মা সৎ গময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়,
মৃত্যোর্মা অমৃতং গময়।
ওঁ শান্তিঃ ওঁ শান্তিঃ ওঁ শান্তিঃ”

(ঈশ্বর আমার সীমান্ত ফিরিয়ে দাও কাব্যগ্ৰন্থ থেকে)

শুক্রবার, ২২ মে, ২০২০

অভিব্যক্তি ন্যূনতম / সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়
















অভিব্যক্তি ন্যূনতম
সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়


কথায় আছে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়,
সেটা জোগাড় করতে মানুষ যখন সময়ের অপেক্ষায়।

এমনই সময় এই ঝড়,
এবার শুনলাম সে নাকি মরেছে।
তবে মরণ কামড় বসিয়ে গেছে আগেপিছে !

সবটা দেখে আমরা স্তম্ভিত,
দেখলাম ঝড়ের তাণ্ডবে বড় বড় গাছ এখন ভূপতিত,
জমি হতে উপড়ে নিয়েছে গভীর শিকড় কতশত !

মাটির ঘর, টিনের ছাদ
সব উড়ে গেছে চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে শতাব্দীর বিষাদ।
দেখছি জলের নিচে,পোলের  তলায় মৃতদেহ,
তবুও অদ্ভুত ভাবে কেউ করছে সন্দেহ !

এদের মনে নূন্যতম হিন্দোল নেই  বিন্দুমাত্র,
মনে হয় রক্তের বন্যা বইলে ভালোই হতো।
তাই তো এতো সহজে বলা যায় - ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম,
পড়ে থাকা সবুজেরা মুখ বুজে গিলে নিল কথাটা
যেহেতু ওদের অভিব্যক্তির প্রকাশ ছিল ন্যূনতম ।

তবে আমাদের নয়,
আমাদের মনে আছে বিষাদের ছায়া
চোখে আছে অন্যায়-অবিচারের বিপক্ষে মানবিকতার মায়া।

অতিথি দেব ভব ? / সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়
















অতিথি দেব ভব ?
সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়

সবাই যেন অপেক্ষায় আছি
খালি মনে ভয় এই নতুন অতিথিকে নিয়ে,
এই বোধহয় না বলে এসে গেলেন!
পান থেকে চুন খসলেই ভাবি,
এই বোধহয় ঘর দখল করে জায়গা করে নিলেন ।
সকাল বিকেল এক কথা,
হাতে পায়ে লোশন মেখে
নিজেকে ফিটফাট রেখে নিয়মবিধি মাথায় রেখে
পথ চললেও চারপাশে বিভীষণ নিয়ে মাথা ব্যথা।
পছন্দের সিংহাসনে তিনিই বিধাতা,
আমরা শুধু নানান ফুল দিয়ে তুষ্ট করছি মাত্র।
তবু নাক- মুখ -চোখ -কান বন্ধ ক"রে
একমনে “অতিথি দেব ভব” না বলে,
তার দুর্নাম করে চলেছি দিবারাত্র !

তবু কিনে চলেছি একের পর এক মারণাস্ত্র।
বলছি চোখের সামনে থেকে দূর হও ঘরের বাইরে যাও,
আসলে অতিথির তাৎপর্য পালটে গেছে এক লহমায়!
পৃথিবীর চোখে আঙ্গুল দিয়ে অতিথি দেখাচ্ছে বিজ্ঞানের দৌড় এই সময়
সবটা দেখে মনে হচ্ছে সর্ব শক্তিমানেরা আজ বড়ই অসহায় !

ওরা ভাবছে না একবার "অতিথি দেব ভব" ?

সাম্প্রতিক লেখা কবিতা

ঘর বেঁধেছে ঝড়ের পাখি / রঙ্গনা পাল /পর্ব-৪০

ঘর বেঁধেছে ঝড়ের পাখি/ রঙ্গনা পাল / পর্ব-৪০         অতীত হোক বা বর্তমান নারী চিরকাল পুরুষের ভালোবাসায় বশ। হ্যাঁ কেউ কেউ কখনও কখনও ছলনা করে ...