সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭

অস্তমিত সূর্য / সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়














অস্তমিত সূর্য
সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়



আজ ২২শে শ্রাবণের সেই অশ্রু প্লাবিত দিন,

সূর্য অকালে অস্তমিত সবার হৃদয়ের অন্তরে,

মুদিত নেত্রে রবি আর দেবেন না বিচ্ছুরণ জগতে ,

অনন্ত হাহাকার জনসমুদ্রের ঢেউ তোমায় দেখতে,

বারবার স্পর্শ করে সৃষ্টির দেবতার পাদস্পর্শে

সবার আজও করি নত শির ‌‌।



সৃষ্টির শ্রষ্ঠা যেন হয়েছেন সদ‍্য প্রয়াত,

রেখে গেছেন,যুগ যুগ ধরে পান করার অমৃত

এই মানবজাতির কল‍্যানে ।



কল্পনা,স্বপ্ন,বাস্তবতার আগাম বার্তা সৃজন করে,

আগামী প্রজন্মের সন্তানের প্রতি কর্তব্যের দানে।

জীবনের,মরনের তোমার সকল সৃষ্টির অভিধানে,

আজও তুমি আছো হৃদয়ের অন্তরে জেগে,

তোমার আবিষ্কার স্বপ্ন দেখায় মনের মাঝে,

প্রত‍্যহ তোমার আশীর্বাদে সৃষ্টি চলছে জগতে,

বিফলতা / সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়















বিফলতা


সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়


বিফলতা কথায় লুকিয়ে আছে হার মানার আক্ষেপ
বিফলতা কথাটা জীবনের সফলতার মাপকাঠিতে মাপা 
একটা বড় ফাঁক যা দিয়ে উড়ে যায় বন্দী খাঁচার পাখি,
বিফলতা আনে অদম্য ঈচ্ছা, হার না মানার পদক্ষেপ।
সফলতা আসে বিফলতাকে সাথী করে,
দুজনে যেন অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু,
একে অপরকে পরিপূর্ণ ক‍রে বারে বারে।

আসলে বিফলতা সিড়ির ধাপ যা সফলতাকে
সিড়ি অতিক্রম করে তার ঘরে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করে,
ইতিহাস তো বিফলতা নিয়ে সফলতার মালা গাঁথে।

বিফলতার মধ্যে আছে দুঃখ,অভিমান,
কামনার অভিলাষা আর প্রাপ্তির সন্ধান,
সফলতা হলো ওই সাত রানীর এক মানিক ধন,
যা পেতে গিয়ে বিফলতার গাছে চড়ে বসে সকলে।

পানশালা













পানশালা

সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়


মজলিসে বসেছে সবাই
বাঁধা জীবনের ব‍্যাতিক্রম তাই,
আজ নতুনত্বের ছোঁয়া পেতে চায়
মন তাই পানশালায় যায় ।

প্রিয় পানীয় হাতে নিয়ে,কথার সব ফোয়ারা ছোটে
দূনিয়ায় নকসা তখন সবার হাতের মুঠোয়ে ভাসে।

জীবনের রঙীন স্বপ্ন যত নতুন পথে হাঁটে কত,
হারিয়ে যাওয়া মনের আবেগ,পানশালার টেবিলে ছোটে।
আশা নিরাশার বন‍্যা উঠে,
সময় কাটে অবশ মনে।

কত ব‍্যাথা,কত আনন্দ পানশালায় গেলাস হাতে,
তর্ক বির্তক চলে,কখনো ছন্দের পতন ঘটে।
মায়াবী রাতের প্রলোভন ডাকে,
পাশের টেবিল কাছে আসে।
লুকনো প্রেমের ব‍্যর্থ কথা,
বিরহের বেদনা ব‍্যাথা ।

হঠাৎ মনে উদারতা বাড়ে, পানশালার শেষের পথে,
সকলের ঘরে ফেরার পালা,মনে এক স্বস্থির ছায়া।
রাতের অন্ধকারে ফুটপাতে অভুক্তরা শুয়ে,
নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া ওদের দুঃখের মাঝে।
  
পানশালা জগত চেনায় আসল নকল ভেদ কর দেয়,
লোকে বলে পান পিপাসু তুমি অসুস্থ সমাজ মাঝে।
আমি বলি সুস্থ আমি,পানশালায় মনের তৃষ্ণা মেটাই
সমাজের তোমরা যারা সুস্থ মানুষ দিক ভ্রষ্ঠ
আজ সংর্কীন মনের পাপে।




ধর্মের রক্তিমতা

সভ্যতার বিকাশ জেগেছে চারিপাশে,
মানুষ আজ বিজয়ী পৃথিবীর বুকে,
দুর্গম অচল,শ্বাপদসঙ্কুল অয়ন লঙ্ঘেছে বারবারে,
তবু আগুন জ্বলে ঘরে ঘরে,মৃত্যুর প্রলয় নৃত্য করে,
ভালবাসার প্রদীপ নিভেছে ধর্মের নামে,
ঈশ্বরের চোখে অশ্রুবহে ধর্মের উন্মাদনা দেখে।

জাত,পাত ধর্ম নিয়ে সাজ সাজ রব,
রক্তের হোলি চলছে চারিপাশে,
অন্ধকারে নিভেছে মনুষ্যত্বের মন,
মানুষকে করে ধর্মের নামে আকুঞ্চন ।
দেশের রাজারা এখন ধর্ম নিয়ে খেলে,
ভানুসিংহের মৈত্রবানী ভুলেছে সব অচিরে ।

ধর্মের মিথ্যা মানুষের সৃষ্টি করা,
সমাজে হয়েছে অনাসৃষ্টি তাই সবাই দিশেহারা,
মৃত্যু আজ ধর্মের নামে ঈশ্বর কামনায় ব্রতী,
পৃথিবী আজ ধর্মের রক্তিমতায় বলি।

ধর্মান্ধগুলো চরিতার্থ করে আপন স্বার্থ যত,
পশুরা আজ মানুষের চেয়ে ধর্মে উন্নত।
ওদের নেই ধর্মের নামে  কোনও বলি,
নেই কোনও ধর্মের নামে হানাহানি।
মেটায় খাদ্যের ধর্ম প্রয়োজনীয়তায়,
করে না বিভেদ ধর্মের নামে অছিলায় ।

কবে হবে শেষ,ধর্মের এই  হত্যাপুরীর কথা?
ধর্মে হবে স্থাপিত মনুষ্য ধর্মের সফলতা।
কবে হবে বন্ধ ধর্মের নামে মিথ্যা দ্বিচারিতা?
হানাহানির পথ ছেড়ে গড়বে নিবিড় ভালোবাসা ।

প্রেম বন্ধনে রাখী

রক্ষা কবজ পরিয়ে দিলাম এই শুভক্ষণে,
ভালোবাসার প্রদীপ জ্বালাই ভাতৃত্বের অঙ্গীকারে,
শতায়ু কামনায় তোমার হাত দুটো আমি ধরি,
হৃদয়ের যত শুভকামনা নিয়ে আশীর্বাদ তোমায় করি,
এক বৃন্তের দুটি পাতা হয়ে যেন জীবনভর মোরা চলি‌‌।

তোমার শুভকামনা যত চিরস্থায়ী আমার জীবন পথে,
রাখী বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অন্তর আজ আনন্দ
সমাগমে।

ভ্রাতা ভগ্নির ভালোবাসায় রাখী অমরত্বের প্রতীক
রামচন্দ্রের রাখী উৎসব পূরাণে ঐতিহাসিক,
কখনো রাখী লক্ষীদেবীর বলিকে রাখী পরাবার উপাখ্যানে,
কবিগুরুর রাখী আনে বাংলায় সমপ্রতি সর্বধর্ম সমন্বয়ে ।

রাখী থাকে চিরকালের শপথ নেওয়ার অধিকারে,
বিভেদের মাঝে ঐক্য আনে চিত্তে ঐক‍্যতানে ।
অমর প্রেমের উৎসবের দিনে আনন্দগীত গাহি,
রাখী পূর্ণিমা জগতে থাকুক অমর ভাতৃত্বের বন্ধনে ।

ভঙ্গুর স্বপ্নের খেলাঘর

আমি বেঁধেছিলাম খেলাঘর তোমার সাথে 
প্রত‍্যহ স্বপ্ন দেখেছি তোমার দুচোখের মাঝে 
গড়েছি স্বপ্নের নীড় আমার ভালোবাসা নিয়ে
ভাসিয়েছিলাম খেয়া তোমার ওই অশ্রুজলে।

জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত ছিল তোমাদের নামে,
স্বপ্নপূরণের আশা হয়ত ভুল আপন মনের কাছে,
ভাবিনি অজান্তে ভালোবাসা জন্ম দেবে 
এক স্বার্থপর মীরজাফরের‌।

সিরাজ আজ শায়িত আমার দেহের মাঝে
কব‍রের নীচে আমি প্রশ্ন করি নিজেকে
ভালোবাসা ছিল ভুল তোমাকে নিয়ে
তোমার মন ছিল সমুদ্রের সুনামির ঢেউ
আমার ভালোবাসার নীড়ে আছড়ে পড়ে
ভঙ্গুর আমার ছোট্ট বালির স্বপ্নের নীড়ে।

সুনামির প্রলয়ের মাঝে  আমি পারিনি
আমার ছোট্ট স্বপ্নের বাসায় বাঁধন দিতে,
থাক তোমার মনের সমুদ্রের সুনামির ঢেউ
দেখো যেন আর আছড়ে না পড়ে দিশাহীন ভাবে
আমার ওই পরে থাকা স্বপ্নের নীড়ের অবশেষে।

ভুলো না আমার দিশাহীন ভালোবাসাকে
স্বপ্নের আগুনে পুড়তে আমার ভয় হয়
আমার কাছে তাই মীরমদনের ভালোবাসা
অমর অক্ষয় ।

তুমি এসেছিলে

সুষমিতা তুমি সেদিন এসেছিলে
এক বসন্তের ঝরে যাওয়া পাতাগুলোকে স্মৃতি করে,
তুমি এসেছিলে দক্ষিনের দমকা হাওয়া সাথে করে।
তোমার না পাওয়া চাওয়া গুলোকে সাথে নিয়ে
বৃষ্টির দিনে ভিজতে ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে‌।
পাহড়ের ওই চূড়ায় দাড়িয়ে দুজনের পৃথিবী দেখা
একস্বপ্ন সঙ্গে করে।

রোজ ভাবি তোমার মনের ছোঁয়া পেতে হোক না দেরী
তবু আমি রোজ পথ চেয়ে বসে থাকবো তোমার পথে
ঠিক যেমন রাত অপেক্ষায় থাকে প্রভাতের পথ চেয়ে,
গ্ৰীষ্ম যেমন বর্ষার আগমনে নিজেকে ভেজায়,
আমি তোমার ভালোবাসার অপেক্ষায় ভেজাবো
নিজেকে তোমার অনেক দিনের না পাওয়া ভালোবাসায়।

সুষমিতা তুমি এসেছ আজ,
আমি ভিজেছি তোমার ওই ভালোবাসার ছোঁয়ায়,
আমার ছবিতে থাকা মালা তোমার হাতের স্পর্শে রোজ সুগন্ধ ছড়ায়,
তোমার চোখের জলে মিটেছে আমার তৃষ্ণা আজ।

ইচ্ছে করে

ইচ্ছে হলো,নীল আকাশে উড়ান ভরার অভিলাষা,
মনের মাঝে প্রত‍্যহ এক স্বপ্ন গাঁথার পরিভাষা‌‌।
ইচ্ছে হলো,গভীর রাতে অমবস‍্যায় চাঁদ দেখা,
হৃদয়ে মাঝে প্রভাতের গান ভালোবাসার প্রার্থনা ।

ইচ্ছে হলো,আকাশের ওই নীলাম্বরকে কাছে পাওয়া,
রাতের বেলায় না ঘুমিয়ে স্বপ্ন নিয়ে জেগে থাকা ।
ইচ্ছে হলো,অন্ধকারে অজানা পথের হদিস খোঁজা
মনের মাঝে রোজ জোৎস্নার আলো ফুটিয়ে রাখা।

ইচ্ছে হলো ভোরবেলাতে গাছে গাছে ফুল তোলা,
ইচ্ছে হলো দূরের জলায় পানকৌড়ির মাছ ধরা।
ইচ্ছে হলো ছুটির সকাল সর্ষে ক্ষেতে ছুটতে যাওয়া,
ইচ্ছে হলো বিকেল বেলায় মাঠে গিয়ে দোল চড়া।
ইচ্ছে হলো পুকুর পাড়ে লুকিয়ে গিয়ে আম পাড়া,
ঈচ্ছে হলো রাতের আকাশে অন্ধকারে তারা গোনা।

ইচ্ছে যত আজ মরেছে বাস্তবের সব জল্পনাতে,
কল্পনার ওই স্বপ্ন যত আটকে গেছে চার দেয়ালে।
ইচ্ছে যত ওই ছোট্ট মিনির শহরের এই জেলখানায়,
বড় হবার স্বপ্ন কাড়ে ঈচ্ছে মরে মেকি দুনিয়ায়।
ইচ্ছে হলে বৃষ্টির বারিধারাকে কি আটকানো যায় 
পদ্মপাতায়?
দিনান্তে একবিন্দু ঈচ্ছের ফোঁটা ওই দেখা যায়।

ইচ্ছে হলো মনের মাঝে মহাকাশের সত্য যত
ভালোবাসার স্বাধীনতা ইচ্ছে পূরণ করবে শত ।

স্বাধীনতার স্বপ্ন

ওই দেখো তিরঙ্গা উঠেছে দিল্লির মসনদে,
ফিরিঙ্গীরা নিয়েছে বিদায় মাতৃভূমি হতে চিরতরে,
পরাধীনতার গ্লানির হয়েছে দেশভক্তিতে অবসান,
ভারতভূমির বীর সৈনিকদের হচ্ছে জয়গান ।

রবিপ্রভা করেছেন রচনা জনগন অধিনায়কের গীত,
দেশনায়কের শপথবাক্যে সবাই শুনেছে জনহীত,
আশায় নতুন ঘর বাঁধে স্বাধীন ভারতের সন্তানেরা,
অবহেলিত,অপমানিত আর নেই কোন যৌক্তিকতা।

স্বপ্ন সবার ভারত আমার জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসন নেবে,
স্বাধীন ভারতে মুক্ত সবাই স্বপ্নের জীবন পাবে,
জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী স্বপ্ন সবার হৃদয় মাঝে,
বিভেদের মাঝে ঐক্যবদ্ধ ভারত গনতন্ত্রের জয়গানে।

বিপ্লব আর দেশপ্রেম অমর হয়েছে কি শুধু সবার মনে,
আজ দেশনায়কদের কপটতায় আজ রক্তে রাঙা সবখানে।
স্বাধীনতা কি হারিয়েছে তার গরিমা ও ত্যাগ,
দেশভক্তির গান কবে আনবে জীবনে আত্মত‍্যাগ,
জাতি,ধর্ম নির্বিশেষে হিংসার পথ ভুলে
স্বাধীনতা সফল হবে দেশপ্রেমের ধর্মে দীক্ষা নিলে ।

বাঁশিওলা

আমি শুনেছি তোমার বাঁশি আজ প্রভাতের আকাশে,
অর্কর আগমনের পূর্বে পক্ষীদের কলরবে মাঝে।
তোমার মুরারির সুর ধ্বনিত সকল প্রাণীর প্রানে
আমি শুনেছি তোমার বাঁশি প্রত‍্যহ রাতে
ঘুমেতে গিয়ে মনের অন্তরে
মন্দিরের ঘণ্টার ধ্বনির পূর্বে আরতির সাথে।

নিলাদ্রী কে কাছে পেতে আমি গিয়েছি নীলাচলে,
কখনো গিয়েছি বদ্রীধামে,তিরুপতির দরবারে।
আমি শুনেছি তোমার বাঁশি রাখাল বালকের সাথে,
হরিপ্রাসদের চৌরেসিয়ার আসরের মাঝে,
ভুলেছি জীবনের যত অবসাদ তোমার ওই বাঁশির মধুর সুরে,
আমি শুনেছি তোমার বাঁশি জীবনের জয়গানে,
দিনের শেষে দুপুর বেলায় ওই বাঁশি বেচতে আসা আবদুলের কাছে,
কখনো গ্ৰামের রাঙামাটির পথে পারুলের মুখে।

আমি শুনেছি তোমার বাঁশি নিধুবনের অন্দরে,
রামলীলার ময়দানে কখনো ভোরের কোকিলের ডাকে ।
আমি শুনেছি তোমার বাঁশি স্বাধীনতার প্রাতঃকালে।

মনে পড়ে হ‍্যামিলনের বাঁশিওলার কথা।
যাবার সময় হয়ে এলো তোমার সাথে 
বাঁশি শিখবো তোমার পাশে বসে ।
হে করুনাধি জগতপিতা আমার
তোমার এই জন্মদিনে শোনাও না আবার 
তোমার সেই মনমোহিনী বাঁশি ।
করবে দূর জাতপাতের বিভেদ যত,
তোমার ওই বাঁশি ।

স্বাধীনতার একাত্তর

স্বাধীনতায় আজ রামধনুর সাতরঙে মন রাঙা,
সঙ্গীতের সপ্তসুরে রাগকে আপন করা ।
স্বাধীনতায় ইচ্ছে ঘুড়ির আকাশ ভ্রমন করা,
সত্যমের জয়তের জয়গীত  গাওয়া।

স্বাধীনতা গরীবের  দুমুঠো চাল ডাল খেতে পাওয়া,
রাতের বেলায় একটুখানি শান্তির ঘুমোতে যাওয়া‌‌।
স্বাধীনতা রাম রহিমের একসাথে পথ চলা,
ভানুসিংহের রাখী বন্ধনে ঐক‍্য ভালোবাসা।

স্বাধীনতা গভীর রাতে নিশ্চিতে ঘরে ফেরা,
নারী পুরুষের ঐক‍্যতানে সম অধিকারে পথ হাঁটা।
স্বাধীনতা মহান দেশের আত্ম বলীদানের কথা,
রক্তের বিভেদ না করে মিলনমেলায় গান গাওয়া।

স্বাধীনতায় লাল,গেরুয়া,সবুজ রঙের নেই ভেদাভেদ,
পথের ধারে শুয়ে থাকা অভুক্ত মানুষের বিভেদ।
স্বাধীনতা আজ একাত্তরে  চেয়েছে প্রকৃত গনতন্ত্র,
চেয়েছে সব মানুষের নিস্বার্থ হবার মহামন্ত্র।

আধফালি পোড়া রুটি

রাস্তায় পড়ে থাকে আধফালি পোড়া বাসি রুটি,
চেয়ে আছে অভুক্ত শিশুদের করুন দৃষ্টিখানি,
আধফালি চাঁদ মেটাবে না খিদে পেটের জ্বালা ওদের
চারিদিকে শুধু দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখায় হাতে ক্ষমতা যাদের ।

সেনাপতি,সৈন্য,দেশবাসী সব না খেয়ে মরে,
বোকা জনগন শুধু আলোর রোশনাই দেখে,
পরনের আধফালি গামছা পরে থাকে,
ময়লা গাড়ি রোজ বাঁশি বাজিয়ে আসে,
উচ্ছিষ্ট পোড়া রুটি খেয়েও ওরা জয়গান করে ।

পৃথিবীর বুকে সহস্র গোলা দাগে ওই আসামীরা,
পার পায় দেশনায়ক তকমার খ‍্যাতি নেয় তারা,
লাল রঙের হোলী খেলে ধর্ম পিপাসু জাতের নামে,
খন্ডিত আধফালি পোড়া রুটি খাওয়ার কেউ না থাকে,
পথের ধারে শিশুরা আজও অভুক্ত শুয়ে আছে ‌।

তিনি বৃদ্ধ হলেন

জীবন নৌকা বয়ে চলেছে আজানা জোয়ার ভাঁটায়, 
শৈশব হতে তারুণ্য কাটে কর্তব্যের পরায়ণতায়।
প্রানের প্রদীপ সৃজন করতে হয়েছি আজ রিক্ত শূন্য,
আশায় গেঁথেছি স্বপ্নমালা জীবন পরিপূর্ণ ।

পুরানো ঘড়ি বন্ধ বহুদিন তাই পরে পথে চলা,
কাজের শেষে পদব্রজে স্বপ্নের ঘরে ফেরা । 
ভবিষ্যতের সঞ্চয়েতে প্রদীপের আলো উজ্জ্বল হয়ে উঠে,
জুতোর নীচের সুকতলার পেরেক হাসে চেয়ে মুখপানে।

বৃষ্টির দিনে একটি ছাতায় প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা,
পূজার সময় নতুন কাপড় না পড়ার অজুহাত ভাবা।
বড় দোকানের দামী কাপড় সৃজনশীলতার গর্বে হাতে,
সময় বয়েছে দৃষ্টি প্রদীপের আলো জ্বলেছে বিদেশ বিভুয়ে ।

বৃদ্ধাবস্তায় একাকীত্বের চেষ্টা প্রদীপকে কাছে পাওয়া
নিত্য জীবন শুধু দেখে মুঠোফোনের রসিকতা।
একটু ছবি কিমবা কথায় মনের সান্তনা নেওয়া
বার্ধক্যের রুপকথা মনের কোটায় গুমরে কাঁদে

অন্তিমক্ষনে চিত্তের মাঝে আশার প্রদীপ জ্বলে,
যদি সারা জীবনের সৃজিত প্রদীপ মনের কাছে আসে
বৃদ্ধাশ্রমে জানালা দিয়ে আকাশ পানে চেয়ে দেখা,
নিয়তির এই পরিহাসের কবে ইতিকথা ।

অধিকার সংরক্ষণ

সম অধিকারের দেশে প্নাবণ এসেছে
নারী পুরুষের সমান জায়গা চেয়েছে 
কথাটা আজ সর্বজনবিদিত
ওরা একে অপরের পরিপূরক নিশ্চিত।

বাসের সীটের থেকে রেলগাড়ির কামরাতে
চাকরির জগতে আবার দেশের রাজগদিতে
সংরক্ষণ নিয়ে কত প্রস্তাব পাশ মেধা তালিকাতে 
অধিকার কি সংরক্ষণের দাস
অধিকার জন্মায় ভালোবাসা দিয়ে বিনা ভেদাভদে ।

কেন সংরক্ষণ হয় না জন্মের শুভক্ষণে
দাহকার্য সমাপনের অন্তিমক্ষনে
সংরক্ষণের কি নাভিশ্বাস উঠে সেখানে
মানুষের ভালোবাসা আজ বলি সংরক্ষণে।
মেধা ভালোবাসার সংরক্ষণ কবে হবে
যেদিন দেশবাসীর ভ্রুণ হত্যা বন্ধ হবে।

কফিন

ছূঁতোর কাঠে পেরেক পোঁতে
জনগণ সুখের বিছানা খোঁজে
নেতারা আরামকেদারায় আখতারী গজল শোনে
শিক্ষার্থী বেঞ্চে বসে শিক্ষক ক্লাসে অধ‍্যাপনা করে
বড়বাবুরা অফিসে চেয়ারে বসে
সবাই নিশ্চন্তে প্রজাতন্ত্র স্বাধীনতার গর্ব ক‍রে  ।

ছূঁতোরের ছেলে এক সকালে আপন মনে বাস্ক গড়ে
ছূঁতোর সুধায় কি হবে অযথা এই বাস্ক গড়ে
বাস্কের মূল্য নেই বাজারে ডোবাবি ব‍্যবসায় দেনা করে
ছেলেটা বলে গর্ববোধে এই বাস্ক অমূল্য দেশে
সীমান্তে লেগেছে তিরঙ্গার সন্মান অধীকারের লড়াই
সেনাবাহিনীর শহীদেরা শেষযাত্রায় পাবে ঠাঁই 
আমার এই বাস্ক জাতীয় পতাকা পাবে
দেশের মানুষ আবার সুখনিদ্রা দেবে ।

***দেশের সেনাবাহিনীর জন্য উৎসর্গিত**

মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৭

স্বপ্নের ফুলদানি / সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়













স্বপ্নের ফুলদানি
সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়

অন্ধকার মাধবী রাতে,
আকাশ ভরা রুপালি আলোয়...
নির্জন মাঠে বেঞ্চে কাঁধে কাঁধ এলিয়ে মাথা।
কত জমা না - বলা কথা ,
থেমে থাকে না কেবল চোখের দৃষ্টিতে,
তোমার মুখের উপর আধা ল্যাম্পের আলোয়,
ওই মুখে ঘন মেঘের মধ্যে আগুন জ্বালাতেই
আমার দশ আঙুলের ভিতর,
তোমার বেদনাগুলো মেখে যায় আতর।

পৃথিবীর এই সুখের আশ্চর্য নিয়ম,
সবটাই আমাদের দুটো হাতের মুঠোয় !

সবুজ গাছের পাতায় ঢাকা সব চাওয়া-পাওয়া,
কখন যে উড়ে যাবে অজান্তে সবটুকুই অজানা।

তবু তুমি হঠাৎ আসবে জানি,
এইভাবেই আমার মনের আরামকেদারায় বসে
বুকের মাঝে সাজিয়ে দেবে স্বপ্নের ফুলদানি !
রূপালি আলোর শেষে,
আগুনের সব জ্বালানি পুড়ে শেষ হলে
ফুলদানির সব জল ঢেলে দেবে,
গোলাপ আতর মেখে নিঃশব্দে যাবে চলে ।


সাম্প্রতিক লেখা কবিতা

ঘর বেঁধেছে ঝড়ের পাখি / রঙ্গনা পাল /পর্ব-৪০

ঘর বেঁধেছে ঝড়ের পাখি/ রঙ্গনা পাল / পর্ব-৪০         অতীত হোক বা বর্তমান নারী চিরকাল পুরুষের ভালোবাসায় বশ। হ্যাঁ কেউ কেউ কখনও কখনও ছলনা করে ...